হেফাজতে ইসলামের ডাকেই বাংলাদেশে আল কায়েদা’র তৎপরতা

0

গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর হাতে বেশকিছু সংখ্যক আনসার আল ইসলাম জঙ্গী গ্রেফতার হয়েছে। সর্বশেষ গত শনিবার পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট গ্রেফতার করেছে আরো চার জঙ্গীকে। এদের সবাই আনসার আল ইসলামের সদস্য।

সিটিটিসি’র প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেফতারকৃত আনসার আল ইসলাম জঙ্গীরা সিলেট জেলায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের উপর হামলার পরিকল্পনার পাশাপাশি ঢাকায় থানা কিংবা পুলিশের টহল টিমের উপর হামলার পরিকল্পনা করছিলো। উল্লেখ্য, আনসার আল ইসলামের সাথে আন্তর্জাতিক জঙ্গী গ্রুপ আল কায়েদার অংশ। আনসার আল ইসলাম জঙ্গী গোষ্ঠীর কিছু সদস্য আফগানিস্তানে প্রশিক্ষন নিচ্ছে বলে জানা যায়।

আটককৃত জঙ্গীরা হচ্ছে মোঃ জসিমুল ইসলাম ওরফে জ্যাক, মোঃ আব্দুল মুকিত, মোঃ আমিনুল হক ও সজিব ইখতিয়ার।

জসিমুল ইসলাম ঢাকার অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটির বিবিএ’র ছাত্র। আব্দুল মুকিল হবিগঞ্জ জেলায় মারকাজুস সুন্নাহ আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক। আমিনুল হক সিলেটের আল হিদায়া ইসলামিক ইন্সটিটিউট এর ছাত্র এবং সজিব ইখতিয়ার সুনামগঞ্জ ক্লেজের ছাত্র।

এক কাতারে হেফাজতে ইসলাম আর জঙ্গীরা

বাংলাদেশের ইসলামিক বিপ্লবের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে এদেশে খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় হেফাজত। ধরমের অপব্যখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার মাধ্যমে দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টিই ছিলো ওদের মূল টার্গেট। পাশাপাশি অসংখ্য ইউটিউব চ্যানেলে উসকানীমূলক ওয়াজের মাধ্যমেও মানুষকে সরকারের ও ধর্ম নিরপেক্ষ শক্তির বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে দেয়াও ছিলো হেফাজতের অন্যতম উদ্দেশ্য। এসব অপকৌশল সামনে রেখেই এগিয়ে যাচ্ছিলো হেফাজত। পরবর্তীতে এদের সাথে যুক্ত হয় জঙ্গী গোষ্ঠী এবং তবলিগ জামাত। তবলিগ জামাতের মিশন ছিলো অরাজনৈতিক সংগঠনের খোলসে মানুষকে হেফাজতের দিকে আকৃষ্ট করা। আর জঙ্গি গ্রুপগুলোর দায়িত্ব ছিলো বড় ধরনের নাশকতা চালানো। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আনসার আল ইসলামের জঙ্গীরা গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই এদের সাথে হেফাজতে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো।

অসহায় নারীরা ছিলেন হেফাজত নেতাদের লালশার টার্গেট

বাংলাদেশের আইনে কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ বা চুক্তি ভিক্তিক বিয়ে সম্পূর্ণভাবে অবৈধ এবং আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তারপরও হেফাজতে ইসলামের বহু নেতা অসংখ্য নারীকে তাদের লালশার শিকারে পরিণত করেছে কথিত কন্ট্রাক্ট ম্যারেজের নামে। মূলত কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ বা মু’তা বিয়ের প্রচলন আছে শিয়া সমাজে। বিশেষ করে ইরানে এটা বহুল প্রচলিত। সেখানে যেকোনো নারীকে কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ বা মু’তা বিয়ের মাধ্যমে আধ ঘন্টা থেকে শুরু করে নির্দিষ্ট যেকোনো মেয়াদের জন্যে যৌন সঙ্গিনীতে পরিণত করা যায়। ইরানী সমাজে পতিতাবৃত্তিও চলে মু’তা বিয়ের নামে।

হেফাজত নেতারা নিজেদের সুন্নী মুসলমান দাবী করলেও তারা শিয়া ধর্মের মু’তা বিয়ের রীতিটি অনুসরণ করতো নিজেদের যৌন লিপ্সা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে। এদের মূল টার্গেট ছিলেন অসহায় নারীরা। অনেক ক্ষেত্রেই নারীদের সুখের সংসার ভেঙ্গে হেফাজত নেতারা তাদের চুক্তি ভিক্তিক বউ বানিয়ে এদের উপর যৌন নির্যাতন চালাতো। মামুনুল হকসহ হেফাজতে ইসলামের বহু নেতার এমন কন্ট্রাক্ট বউ আছে বলে জানা গেছে।

আরো জানা গেছে, ২০১৩ সালে ঢাকায় ব্যাপক তান্ডব চালানোর পরই মূলত হেফাজতে ইসলামের প্রতি আন্তর্জাতিক জঙ্গী গোষ্ঠী এবং পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ও জঙ্গী অর্থায়নকারী দেশ কাতার ইত্যাদির নজর পড়ে। সেসময় থেকেই হেফাজত নেতাদের হাতে বিদেশ থেকে গোপন পথে আসতে থাকে বিপুল পরিমান টাকা। এছাড়াও হেফাজতে ইসলামের নেতারা পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র সঙ্গে মিলে জাল ভারতীয় টাকার ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। আর এসব অপতৎপরতার মাধ্যমে হেফাজতের কিছু নেতা বনে যান কোটিপতি, যা মাদ্রাসার অনেক শিক্ষক এবং ছাত্রদের অজানা ছিলো। এমনকি হেফাজত নেতাদের কন্ট্রাক্ট ম্যারেজের মাধ্যমে অসংখ্য নারীর সাথে যৌনাচারের বিষয়গুলোও মাদ্রাসা ছাত্রদের একেবারেই অজানা ছিলো। যদিও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা প্রায় নিয়মিতভাবেই হেফাজতের নেতাদের বলাৎকারের শিকার হয়েছে। এসব অনাচারের বিরুদ্ধে কথা বলার কিংবা প্রতিবাদ করার সাহস ছিলোনা মাদ্রাসা ছাত্রদের। জানা গেছে, মাদ্রাসা ছাত্রদের সরকার কিংবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো যদি ভরসা দিতে পারে তাহলে হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে বলাৎকারের অভিযোগ তুলবে মাদ্রাসার শতশত শিক্ষার্থী।

Please follow Blitz on Google News Channel

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here