‘ঝড়াফুলের রুপকথা’ নাটকটি দেখে কলকাতার অভিনেত্রী এষা কর মুগ্ধ

0

স্মৃতি সেন গুপ্ত

যেকোনো সৃষ্টিশীল কাজেই যখন কেউ উৎসাহব্যাঞ্জক ভূমিকা রাখেন, তখন তা ওই উদ্যোগকে আরো শাণিত করে। কলকাতার অভিনেত্রী এষা কর সে-ই ছোটবেলা থেকেই তাঁর বাবার সংগঠন কসবা মনিমেলা’র মাধ্যমে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলের সাথে। তাঁর একটা সাক্ষাৎকার আমরা ছাপবো ক’দিনের মধ্যেই। এষা বড় মাপের অভিনেত্রী – এতে তো সন্দেহ নেই। কিন্তু এর চেয়েও বড় কথা হচ্ছে তিনি অনেক বড় মাপের একজন মানুষ। কারণ, যে মানুষ অন্যের কাজের প্রশংশা করতে জানে, সে নিশ্চিতভাবেই আর দশজনের মতো নয়।

‘ঝড়াফুলের রুপকথা’ নিয়ে এশা তাঁর ফেইসবুক টাইমলাইনে লিখেছেনঃ

“থার্ডবেল পরলো। নিভলো মঞ্চের আলো । মঞ্চের মায়াময় আলো আর “তোমরা কুঞ্জ সাজাও গো, আজ আমার প্রাণনাথ আসিতে পারে” গানের সঙ্গে, মঞ্চের চরিত্রদের সঙ্গে আমরা ও সোনার শহর-এ পা রাখলাম।

শহরের এক বিখ্যাত নিষিদ্ধপল্লী। সব চরিত্র কাল্পনিক-এর মত কাল্পনিক নয়। এ নাটকের চরিত্ররা সবাই, কিন্তু কোথাও বোধহয়, তাদের চাওয়াপাওয়া, আঘাত-যন্ত্রণা, স্বপ্ন আর জীবনের লড়ে যাওয়ার গল্পগুলো মিলে যায়। আর তাই তাদের একেকজনের জীবনের অধ্যায়, একটু ভালো থাকতে চাওয়া, না পাওয়ার যন্ত্রণা গুলোর একের-পর-এক দৃশ্য চোখের কোল ভিজিয়ে দেয় বারবার। এই মুখোশপরা তকমা আটা সমাজের বিরুদ্ধে ‘জিহাদ’-এ ফেটে পড়তে চায় এ অন্তরাত্মা।

এ নাটক না দেখলে কি জানতে পারা যেত চেনা শহরের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অচেনা সেই সোনার শহরটাকে?  সেই ঝরা ফুল – এদের জীবনের গল্পগুলোকে? কি সুন্দর স্বতঃস্ফূর্ত সাবলীল অভিনয়   সবার! আলাদা করা যাবেনা নতুনদেরও। এত অভিনব ভাবনা আর প্রয়াস – এ বোধয় নাইজেল [নাইজেল আক্কারা]-এর  পক্ষেই সম্ভব। হ্যাটস অফ নাইজেল, এ গ্রেট স্যালুট তোমাকে। আর এ নাটকের নির্দেশক চিরঞ্জীব গুহ – কি অসম্ভব পরিশ্রম আর নিষ্ঠা থাকলে এমন একটা প্রোডাকশন উপহার দেওয়া যায় – তোমার ডেডিক্যাশনটার প্রমাণ। হ্যাটস অফ তোমাকেও! অভিনয়ের কথা আলাদা করে কি বলবো? সবাই মনপ্রাণ ঢেলে অভিনয় করেছে, তবু তার মধ্যেও স্বর্ণ বড্ড দাগ কেটে গেলো, ওর প্রতিটা অভিব্যাক্তি আর সংলাপ মুগ্ধ করেছে সবাইকে, আর সেই সঙ্গে ওই গানটা খাঁচার ভিতর অচিন পাখি ক্যামনে আসে যায়- গায়ে কাঁটা দিয়েছে আর মনের ভিতরটা পলকে ডুকরে উঠেছে।সমাদ্রিতা’র অভিনয়ও বড় ভালো লাগলো। আর কী স্বাভাবিক সাবলীল চা ওলা’র চরিত্রে ছেলেটি, ঠিক সেরকমই সাবলীল আর মজার কলতলা’র ঝগড়া। বাকি চিরঞ্জীব, সুদীপ্তা তন্বী, আর সব্বাই খুব, খুব প্রাণোচ্ছ্বল। আর শেষে রবীন্দ্রনাথ এর নাটকের রূপায়ণ সঙ্গে নিজেদের জীবনকে মিশিয়ে দেওয়া — না আর বলবো না, বাকিটা দেখতে গেলে আপনাদের আসতেই হবে পরের শো’য়। এই ফেব্রুয়ারিতেই বেহালা শরৎ সদন-এ।

মিউজিক নাটকের একটা প্রধান সম্পদ। কস্টিউমও যথাযথ। সেট ও যথেষ্ট ভালো। নাইজেল, দুর্বার আর কোলাহল এর এই ‘ত্রিশক্তির’ সম্মিলিত প্রয়াসকে শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা। এ প্রয়াস সত্যিই এক অনন্য প্রয়াস।

‘ঝড়া ফুলের রূপকথা’ যেনো মঞ্চে একঝাঁক নতুন তাজা ফুলের জন্ম দেয় বার-বার । আর পরিশেষে সবাই আসুন দেখতে , সবাই তো কত জলসায়, কত টাকা খরচ করি। যদি তার কিছুটা থেকে একটা টিকেট আর একটা দিন বাঁচিয়ে এই নাটকটি দেখতে আসি, একটু উৎসাহ পাবে সবাই।

আসুননা অন্তত সবাই একটু চেষ্টা করে, সময় করে, বেহালা শরৎ সদন-এ – এক অনন্য প্রয়াস এর সাক্ষী হতে”।

আমাদের কথাঃ

হ্যা, ঠিকই বলেছেন এষা। এমন একটা উদ্যোগকে উৎসাহ না জোগানোর মতো ইতর মানষিকতার কেউ নিশ্চয়ই আমাদের সমাজে নেই। এই নাটকটিকে উৎসাহ জোগানো – এটিকে প্রমোট করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এব্যাপারে উন্নাসিকতার সুযোগ নেই একদম।

আমাদের এই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানটির চারপাশে যতো না সাংবাদিক, এর চেয়ে ঢের বেশী সাংস্কৃতিক জগতের মানুষেরা। চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান, মিউজিক কোম্পানী – এসব তো আছেই। এই পত্রিকার যিনি সম্পাদক, তিনিই হলেন বাংলাদেশের বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলের জনক। ব্লিটজ এবং জমজমাট পরিবারের সবাই কোনো-না-কোনোভাবে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সাথে জড়িত। কেউ সঙ্গীতশিল্পী, কেউ অভিনয় শিল্পী, কেউ মডেল আবার কেউ-কেউ নির্মাতা। বাংলাদেশে প্রায় সবাই জানেন, ব্লিটজ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী একজন গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীতবোদ্ধা।শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে ওনার তালিম আছে অনেক বছরের। সঙ্গীত জগতে ওনাকে সবাই চেনেন শোয়েব চৌধুরী কিংবা ‘সাধক শোয়েব’ হিসেবে।

নাইজেল আক্কারাকে নিয়ে আমাদের সম্পাদকের উৎসাহের অন্ত নেই। এই উৎসাহের কারণ আমরা জানি। একারণেই বাংলাদেশে ‘কোলাহল’-এর সবগুলো প্রডাকশনের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে আমরা কাজ করবো। আমাদের সবগুলো কাগজে নাইজেল আক্কারার সব কাজের প্রমোশন হবে হৃদয় উজাড় করে।

অভিনেত্রী এষা কর-এর প্রতি অজস্র কৃতজ্ঞতা নাইজেল আক্কারা’র কাজে উৎসাহ দেয়ার জন্যে।

পরিশেষে সবার কাছে একটা অনুরোধ – আপনারা যারা নাইজেল আক্কারা-কে ভালোবাসেন এবং তাঁর কাজের প্রশংশা করেন, আপনারা সবাই যদি নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ঝড়াফুলের রুপকথা’ নাটকটির সম্পর্কে পোষ্ট দেন, ঠিক যেভাবে এষা দিয়েছেন, তাহলে আমরা সবাই মিলে এই মহতী উদ্যোগটাকে ছড়িয়ে দিতে পারবো লাখ-লাখ মানুষের মাঝে। এতোটুকু প্রত্যাশা কি আপনাদের কাছে ‘ঝড়াফুলের রুপকথা’ পরিবার করতে পারেনা? ওহ আরেকটা কথা, নাটকটার নাম কলকাতার কাগজগুলোয় ‘ঝড়াফুলের রুপকথা’ লিখা হচ্ছে। আমরাও তা-ই লিখলাম। কিন্ত আসলে সেটা সম্ভবত হবে – ঝরাফুলের রূপকথা।

কলকাতা, তথা পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের খবরাখবর আমাদের পাঠাতে ভুলবেন না যেনো। আমরা যত্নের সাথে সেগুলো প্রকাশের কথা দিচ্ছি।

অনেক শুভকামনা সবাইকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here