হেফাজতে ইসলামের কীর্তিমান নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে শহিদুল ইসলামের সাবেক স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্না ধর্ষণের মামলা দায়েরের পর এবার আরেক নারীও মামুনুলের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জানা গেছে, জান্নাতুল ফেরদৌস লিপি নামের এই নারীকে বিয়ের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মামুনুল হক মাসের-পর-মাস একটা বাড়ীতে আটকে রেখে যৌনদাসীর মতো ব্যবহার করেছেন। ওই নারীর বরাত দিয়ে একটি সুত্র ব্লিটজ প্রতিনিধিকে জানায়, মামুনুল হকের যৌন লালসার শিকার কেবল ঝর্না আর লিপিই নন, এমন অসংখ্য নারীকে নানা অজুহাতে ভোগ করেছেন মামুনুল। এমনকি যেসব মাদ্রাসায় মামুনুলের যাতায়াত ছিলো, সেগুলোর নারী শিক্ষিক এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই মামুনুল হকের দ্বারা ধর্ষিতা হয়েছেন কিংবা তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য হয়েছেন।
এখানেই ঘটনার শেষ নয়। জানা গেছে, শিক্ষাজীবন শেষে মামুনুল হক সিরাজগঞ্জ জেলার এক মাদ্রাসায় চাকরী নেন। সেখান থেকে তাঁকে শিক্ষার্থীদের বলাৎকার করার দায়ে বহিষ্কার করা হয়। এরপর মামুনুল অনেক মাদ্রাসাতেই শিক্ষকতা করেছেন, কিংবা অনেক মাদ্রাসার সাতেই তাঁর যোগাযোগ ছিলো। কিন্তু সবখানেই তাঁর যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা থেমে থাকেনি।
জানা গেছে, মামুনুল হকের বলাৎকারের শিকার কয়েকজন মাদ্রাসা ছাত্র এরই মাঝে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পাশাপাশি, মাদ্রাসাগুলোয় শিক্ষার্থীদের উপর মাদ্রাস শিক্ষকদের ক্রমাগত যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন হাজার-হাজার শিক্ষার্থী। এই প্রতিবাদকারী গ্রুপের কেউকেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে ঘোষণা দিয়েছেন, এবার থেকে তাঁরা আর নীরবে “হুজুরদের” (মাদ্রাসা শিক্ষকদের) নির্যাতন-অত্যাচার সইবেন না। তাঁরা লিখছেনঃ “অনেক হয়েছে। আমাদের এবার নীরবতা ভাঙতে হবে। যুগের-পর-যুগ মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপর হুজুর নামের হায়েনারা ক্রমাগত নির্যাতন চালিয়েছে। ধর্ষণ আর বলাৎকারের রক্তে রক্তাক্ত করেছে হাজার-হাজার মাদ্রাসার পবিত্র অঙ্গন। এভাবে ইসলামকে অপমানিত করা হয়েছে। আল্লাহ্ পাকের পবিত্র কোরআন এর অমর্যাদা করা হয়েছে। আর নীরব থাকা নয়। এবার শুরু হবে প্রতিবাদ। হাজার-হাজার মামলা হবে বলাৎকারকারী মাদ্রাসা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের সব মাদ্রাসা থেকে বলাৎকারকারী আলেম নামের জালেমদের বিতারিত করা হবে। জেগে ওঠো ৯১ হাজার মাদ্রাসার লাখ-লাখ শিক্ষার্থী। গড়ে তোলো প্রতিবাদ। আওয়াজ তোলো, আলেম নামের বলাৎকারকারী জালেম নিপাত যাক, ধ্বংস হোক”।
মাদ্রাসাগুলোর লাখলাখ শিক্ষার্থীর এই আকস্মিক ফুঁসে ওঠা প্রসঙ্গে একজন ইসলামী চিন্তাবিদ বলেন, আলেম সমাজের কলঙ্ক ওরা যারা মাদ্রাসায় বলাৎকার কিংবা ধর্ষণের সাথে জড়িত, এদের বিরুদ্ধে এতোকাল অসহায় শিক্ষার্থীরা কথা বলার সাহস পায়নি। এবার মামুনুল হকের মতো নেতার বিরুদ্ধেই যখন ধর্ষণের মামলা হয়ে গেছে, তখন শিক্ষার্থীরা আস্থা পেয়েছে এটা ভেবে, এবার তাদেরও প্রতিবাদ করার সময় এসেছে।
Please follow Blitz on Google News Channel
For latest updates and news follow BLiTZ on Google News, Blitz Hindi, YouTube, Facebook, and also on Twitter.