মাদ্রাসা ছাত্র-শিক্ষকদের বেসামাল খিস্তী-খেঁউড়

0

সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো দখলে নিয়ে নিয়েছে মাদ্রাসা ছাত্র-শিক্ষক আর হেফাজতে ইসলামসহ জঙ্গী সংগঠনগুলোর সাইবার জিহাদি ইউনিট এবং আইটি সেল। যেখানেই কেউ হেফাজতে ইসলাম কিংবা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কিছু পোষ্ট দিচ্ছেন, তাৎক্ষনিকভাবে ওগুলোতে ঝাঁপিয়ে পড়ছে জিহাদিরা। মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের খিস্তী-খেঁউড় দেখে সবারই চোখ ছানাবড়া। এমন সব বাক্য এবং গালাগাল সেখানে হচ্ছে যা কল্পনারও অতীত। ওসব কমেন্টে মাদ্রাসার ছাত্ররা গর্ব করেই লিখছে “আমরা আগে গালি জানতাম কম। এখন আমরা গালি দেওয়া শিখতেছি”। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় এদের তান্ডব এতোটাই বেপরোয়া হয়ে গেছে যে ওরা এখন সরাসরি কমেন্টে লিখছে “এই পোষ্ট প্রদানকারীর মাথার খুলিতে গুলি করা হোক”। সবচেয়ে অবাক বিষয় হলো, দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর এসবের দিকে খেয়াল নেই। অথচ ইচ্ছে করলেই এই জিহাদি দলের লোকদের আইপি এড্রেস সনাক্ত করে এদের গ্রেফতার করা সম্ভব। এটা কেনো করা হচ্ছেনা?

কদিন আগে ব্লিটজ এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বিএনপির সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক নেতা তারেক রহমানের দুর্নীতিবাজ বন্ধু গিয়াস উদ্দিন মামুন এর অবৈধ কাজকারবারের বিশদ বিবরণ প্রকাশিত হয়। ব্লিটজ-এর ফেইসবুক পেইজে ওই রিপোর্টের নিচে সাইবার জিহাদিরা ঝাঁপিয়ে পড়ে গালাগাল শুরু করে দেয়। এখানে সঙ্গতভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে, গিয়াস উদ্দিন মামুনের জন্যে জঙ্গি এবং হেফাজতিদের এতো দরদ কেনো? কারণ হলো এই মামুনই তার বন্ধু তারেক রহমানের পরামর্শে হেফাজতে ইসলাম আর জঙ্গিদের ব্যবহার করে মার্চ মাসে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করে। এখন কারাগারে হেফাজত কিংবা আনসার আল ইসলাম জঙ্গি গোষ্ঠীর যারাই যাচ্ছে ওদের দেখভালের দায়িত্ব পালন করছে মামুন। এখানে উল্লেখ্য, বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার-হাজার কোটি টাকা আয় করার পর ওই অবৈধ অর্থের সিংহভাগই মামুন বিদেশে পাচার করে দেয়। তার মেয়ে থাকে আফ্রিকা আর ক্যারিবিয়ান দুটো দেশে – ভাগাভাগি করে। দুই দেশেরই নাগরিকতব কিনেছে সে বিশাল অংকের অর্থ বিনিয়োগ করে। জানা গেছে, সেসব দেশে মামুন কৃষি খামার, হোটেল, বার, নাইট ক্লাবসহ বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছে। পাশাপাশি মামুনের কন্যার এক চেলে বন্ধুর মাধ্যমে মামুন নিজেই কলম্বিয়া’র ড্রাগ মাফিয়াদের সাথে মিলে কয়েক শ কোটি টাকা মাদক ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছে।

তারেক রহমান ও তার সঙ্গী মামুনের দুর্নীতির বিষয়ে বেশকিছু মামলা হলেও, এখন অব্দি এদের বিদেশে লুকিয়ে রাখা অর্থের সন্ধান করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। এমনকি গাজীপুর জেলার কাশিমপুর এলাকায় শতশত বিঘা সরকারী জমি নামমাত্র মূল্যে ইজারা নেয়া তারেক-মামুনের জমিগুলো এখনও রাষ্ট্র জব্দ করেনি।

গিয়াস উদ্দিন মামুন তার মালিকানাধীন চ্যানেল-ওয়ান নামের টেলিভিশন চ্যানেল চালানোর সময় বিদেশে স্যাটেলাইটের ট্রন্সপোন্ডার ভাড়া বাবদ প্রতি মাসে প্রায় ২৫ লাখ টাকা অবৈধ পথে পাচার করে। চ্যানেল ওয়ান চলেছে প্রায় তিন বছর। এক্ষেত্রে স্যাটেলাইটের ট্রন্সপোন্ডার ভাড়া বাবদ প্রায় ৯ কোটি টাকা এরা বিদেশে পাচার করেছে। এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা শাখায় খোঁজ নিলেই তো সবকিছুর প্রমাণ মিলবে। তাহলে এই ঘটনায় এখনও মামুনের বিরুদ্ধে মামলা হলোনা কেনো?

চ্যানেল ওয়ানে যে বিজ্ঞাপন চলেছে এর উপর শতকরা ১৫ ভাগ হারে মুল্য সংযোজন কর দেয়ার কথা। প্রতিদিন গড়ে ওই চ্যানেলে বিজ্ঞাপন চলেছে ৫-৬ লাখ টাকার। হিসেব করলে দেখা যাবে এদের প্রদেয় মুল্য সংযোজন করের অংকটা কয়েক কোটি টাকা। এবিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ব্যবস্থা নিয়েছে কি?

Please follow Blitz on Google News Channel

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here