সিলেট ও সুনামগঞ্জে ছিলো নবাব সিরাজ উদ দৌলা পরিবারের জমিদারী

0

এরই মাঝে ব্লিটজ-এর বিশেষ প্রদায়ক জালাল উদ্দিন লস্কর এর লেখায় আমরা জেনেছি ময়মনসিংহ জেলার প্রতাপশালী জমিদার যুগল কিশোর রায় চৌধুরী ছিলেন নবাব সিরাজ উদ দৌলা এবং কাশ্মিরি ব্রাম্মন মোহন লাল কন্যা আলিয়া (যাকে অনেকেই আলেয়া নামে চেনেন) এর সন্তান। জালাল উদ্দিন লষ্কর অবশ্য ওনার লেখায় দাবী করেছেন যুগল কিশোর রায় চৌধুরী-এর মা আলিয়া ওনার হিন্দু নাম মাধবী বদল করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর আলিয়া নাম নেন। আসলে এই তথ্যটা সঠিক নয়। আলিয়া কখনোই ধর্ম পরিবর্তন করেননি বা নবাব সিরাজ উদ দৌলাও এটা তাঁকে করতে বলেননি। ব্যক্তিগত জীবনে নবাব সিরাজ উদ দৌলা ছিলেন ভীষণ অসাম্প্রদায়িক। ধর্ম কর্মের প্রতি তাঁর কোনকালেই আগ্রহ ছিলোনা। বরং তিনি খুব অল্প বয়েস থেকেই নিয়মিত মদ খেতেন এবং একধরনের ব্যাভিচারী জীবন যাপন করতেন।

আলিয়া ছিলেন সম্ভ্রান্ত কাশ্মিরি ব্রাম্মন পরিবারের সন্তান। তাঁকে অনেকেই বাইজি কিংবা নবাবের আসরের প্রমোদ নারী হিসেবে দেখালেও এটা একেবারেই ভুল। আলিয়া নর্তকী কিংবা প্রমোদ নারী ছিলেন না। বরং তিনি ছিলেন নবাব সিরাজ উদ দৌলা’র ভালোবাসার মানুষ। সিরাজের অনেক স্ত্রী থাকলেও আমরা ওনার স্ত্রী হিসেবে লুৎফা বা লুৎফুন্নেসার নাম শুনি। ওনার বাইরের নবাবের আরো অনেক স্ত্রী এবং উপপত্নী ছিলেন। কিন্তু আলিয়ার অবস্থান ছিলো সবার চাইতে একদম আলাদা। তিনি কেবলমাত্র নবাবের ভালোবাসার মানুষই ছিলেন না, নবাবে দরবারেও তাঁর প্রভাব ছিলো অনেক।

পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজ উদ দৌলা ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর কাছে পরাজিত হলে আলিয়ার বাবা মোহনলাল তাঁর নাতী ও সিরাজ-আলিয়া পুত্রকে গোপনে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। সেখানে ময়মনসিংহ জেলার প্রতাপশালী জমিদারের কাছে মোহনলাল তাঁর নাতীর পরিচয় গোপন রেখে দত্তক দেন। বিস্তারিত পড়ুন জালাল উদ্দিন লষ্কর এর লেখায়।

পরবর্তীতে সিরাজপুত্র বেড়ে ওঠেন যুগল কিশোর রায় চৌধুরী নামেই। বড় হয়ে তিনি ময়মনসিংহে প্রতাপের সাথে জমিদারি পরিচালনা করতে শুরু করেন। কিছুদিন পর সিন্ধ্যা পরগনার মুসলিম জমিদারের সাথে তিনি বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। তখন সিন্ধ্যা পরগনার জমিদারের ও তার সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষ হয় যুগল কিশোর রায় চৌধুরীর। এতে মামলা হয় যুগল কিশোর রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে। মামলায় তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন। কিন্তু এতে তাঁর অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়। একই সময় তাঁর দুই পালক মা যুগল কিশোর রায় চৌধুরীর বিরোধিতা শুরু করেন। তাঁরা যুগল কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা করেন এবং সম্পত্তির অর্ধেক তাঁদের নামে নিয়ে নেন।

এসময়েই যুগলকিশোর চৌধুরী নিজের প্রকৃত পরিচয় সম্পর্কে জানতে পারেন। তিনি জেনে যান তাঁর বাবা ছিলেন নবাব সিরাজ উদ দৌলা আর মা আলিয়া। বাংলাদেশে তিনি যে পরিচয়ে বড় হয়েছেন, জমিদারী করছেন, এসব কিছুই তাঁর আসল পরিচয় নয়। এ অবস্থায় যুগল কিশোরের মনে ভয় জাগে। তাঁর দুই পালক মা হয়তো তাঁকে ইংরেজদের হাতে সোপর্দ করে দেবেন তাঁর আসল পরিচয় ফাঁস করে। এই ভয়ে তিনি তৎকালীন শ্রীহট্ট (বর্তমানে সিলেট) জেলায় চলে গিয়ে আত্মগোপন করেন।  এরপর তিনি সিলেটের কাজলশহর (বর্তমানে কাজলশাহ) এলাকায় জমিদারী কিনে নেন।

বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার যাপুর গ্রামের ভট্টাচার্য পরিবারের রুদ্রাণী দেবীকে বিয়ে করেছিলেন যুগলকিশোর রায়চৌধুরী। তাঁদের ঘরে দুই ছেলে আর চার মেয়ে। ছেলেদের নাম হরকিশোর ও শিবকিশোর আর মেয়েদের নাম অন্নদা, বরদা, মোক্ষদা এবং মুক্তিদা। এদের মাঝে শিবকিশোর অল্প বয়সেই মারা যান। শিব কিশোর রাজশাহী জেলার বীকুৎসা গ্রামের কাশীনাথ মজুমদারের মেয়ে ভাগীরথী দেবীকে বিয়ে করেন। শিবকিশোর- ভাগীরথী দম্পতির একমাত্র কন্যা সন্তানের নাম কৃষ্ণমণি।

প্রসন্নকুমার সুনামগঞ্জে ‘জুবিলি স্কুল’ নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন

রুদ্রাণী দেবীর দুই পুত্র সন্তান মারা গেলে যুগলকিশোর আবার বিয়ে করেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম যমুনা। তাদের একজন পুত্র সন্তানের নাম প্রাণকৃষ্ণনাথ রায়চৌধুরী।

প্রাণকৃষ্ণনাথ রায়চৌধুরীকে ভুল করে অনেক ইতিহাসবিদ বলে গেছেন ইনিই যুগলকিশোর রায়চৌধুরী। আসলে যুগলকিশোর ছিলেন প্রাণকৃষ্ণনাথ রায়চৌধুরী’র বাবা।

কবে যুগলকিশোর রায়চৌধুরী মারা যান এ সম্পর্কে কোনও তথ্য এখনও কারো জানা নেই। যদিও ধারণা করা হয় তিনি ১৮১১-১২ সালে মারা যান। তাঁর ইচ্ছে অনুসারে অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে নবাব সিরাজ উদ দৌলা পুত্র যুগলকিশোর রায়চৌধুরীকে সিলেটেই সমাধিস্থ করেন তাঁরই সন্তান প্রাণকৃষ্ণনাথ রায়চৌধুরী।

মূলত প্রাণকৃষ্ণনাথ রায়চৌধুরীর মাধ্যমে নবাব সিরাজ উদ দৌলার বংশের ধারা অব্যাহত থাকে।

প্রাণকৃষ্ণনাথ রায়চৌধুরীর প্রথম ছেলে কাজলকিশোর রায়চৌধুরী বারো বছর বয়সে মারা যান।

দ্বিতীয় ছেলে শৌরীন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রাণকৃষ্ণনাথ রায়চৌধুরী তার ছেলে শৌরীন্দ্রকিশোরকে নিজেদের পারিবারিক পরিচয় সম্পর্কে অবগত করে তাঁকে আন্দোলন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন। তখন শৌরীন্দ্রকিশোর নিজের নাম বদল করে প্রথমে প্রসন্ন চন্দ্র রায়চৌধুরী এবং পরে প্রসন্ন কুমার দে নাম ধারণ করেন।

তিনি ১৮৪৮ সালে হিন্দু কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। তখন হিন্দু কলেজ প্রেসিডেন্সি কলেজে রূপান্তরিত হয়।

শৌরিন্দ্র কিশোরের তিন স্ত্রী ছিল। তার প্রথম স্ত্রী ত্রিপুরেশ্বরী দেবী এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। তার নাম হলো উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী। ত্রিপুরেশ্বরী দেবী সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে মারা যান। ত্রিপুরেশ্বরী দেবীর আত্মীয়রা সন্দেহ করেন শৌরিন্দ্র কিশোর-ই এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। তারা শৌরিন্দ্র কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কিন্তু পুলিশি তদন্তে এই মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে প্রমাণিত হয় এবং শৌরিন্দ্র কিশোরকে মুক্তি দেওয়া হয়। তাঁর ছেলে উপেন্দ্র কিশোর বরিশালে নানার বাড়িতে বড় হতে থাকেন।

এরপর শৌরিন্দ্র কিশোর আবার বিয়ে করেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম মোহিনী। মোহিনীর গর্ভে শৌরিন্দ্র কিশোরের দুই ছেলে ও এক মেয়ে। তাঁদের বড়ছেলের নাম নলিনী কিশোর ওরফে বিজয় কুমার (নাম পরিবর্তন করেছিলেন)। তিনি আবারও নাম পরিবর্তন করে বিজয় কুমার থেকে লালা বিজয় কুমার নাম ধারণ করেন। অন্যদিকে প্রসন্ন কুমারের দ্বিতীয় ছেলে হেমন্ত কুমার। প্রসন্ন কুমারের প্রথম স্ত্রীর ভাই ছিলেন পুলিশ। তিনি যখন সিলেটে বদলি হয়ে আসেন তখন তিনি তার বোনের মৃত্যুর ঘটনা পুনঃতদন্ত শুরু করেন। এই অবস্থায় প্রসন্ন কুমার দে বিপদের আশঙ্কা করে কাজল শাহর জমিদারি তাঁর ম্যানেজারের দায়িত্বে দিয়ে সুনামগঞ্জে জমিদারি কেনেন এবং সেখানে চলে যান।

সুনামগঞ্জে গিয়ে শৌরিন্দ্র কিশোর আবার নাম পরিবর্তন করে প্রসন্ন চন্দ্র থেকে প্রসন্ন কুমার দে নামধারণ করেন। অন্যদিকে তার ম্যানেজার বিশ্বাসঘাতকতা করে এবং কাজল শাহের জমিদারি হাতছাড়া হয়ে যায় প্রসন্ন কুমারের। অর্থাৎ কাজল শাহের জমিদার হিসেবে এখন আমরা যাদের জানি, ওনারা প্রকৃত জমিদার নন। এরা বিশ্বাসঘাতক ম্যানেজারের বংশধর।

প্রসন্ন কুমারের দ্বিতীয় স্ত্রী মারা গেলে তিনি আবার বিয়ে করেন। তার তৃতীয় স্ত্রীর নাম হিরন্ময়ী। হিরন্ময়ী ছয় ছেলে এক মেয়ে। তাঁর ছেলেদের নাম হলোঃ পূর্ণেন্দু, ঘনেন্দু, নীরেন্দু,শরদিন্দু, প্রশান্ত ও নওয়াল কুমার।

প্রসন্নকুমার সুনামগঞ্জে ‘জুবিলি স্কুল’ নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। পরে তা মাধ্যমিকে রূপান্তরিত হয়। তিনি সেখানে প্রথম অধ্যক্ষ হিসেবে চাকরি করেন। তিনি সুনামগঞ্জে প্রথম প্রিন্টিং প্রেস ‘জুবিলি প্রিন্টার্স’ স্থাপন করেন। তারমানে আজকের সুনামগঞ্জ জেলায় জুবিলি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা নবাব সিরাজ উদ দৌলার উত্তরসূরিরা। আর ওই জেলার প্রথম ছাপাখানার প্রতিষ্ঠাতাও ওনারাই।

প্রসন্নকুমার দে ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে ৮৫ বছর বয়সে সুনামগঞ্জে মারা যান।

জানা গেলো, নবাব সিরাজ উদ দৌলা’র উত্তরসুরীরা এখনও সিলেট এবং সুনামগঞ্জ জেলার পাশাপাশি বরিশাল জেলাতে এখনও আছেন।

নবাব সিরাজ উদ দৌলার ব্যক্তি জীবন

নবাব সিরাজ উদ দৌলা-কে বিভিন্ন সময়ে মূলত মুসলমান ঐতিহাসিকরা দেখিয়েছেন স্বাধীন ভারতের প্রতীক এবং একজন বীর হিসেবে। বাংলাদেশের শিক্ষাবোর্ড পাঠ্যগ্রন্থেও সিরাজ-কে নিয়ে যে গল্প অনেকেই পড়েছেন, সেখানেও তাঁকে দেখানো হয়েছে একজন ন্যায়পরায়ণ, বিনয়ী আর দরদী শাসক হিসেবে। অথচ অনেক ঐতিহাসিক বলছেন ভিন্ন কথা।

সিরাজ উদ দৌলা সম্পর্কে ইতিহাসবিদ গোলাম হোসেন সেলিম লিখেন, সিরাজ ছিলেন ভীষণ বদরাগী, উগ্র আর নিষ্টুর প্রকৃতির এক ব্যক্তিত্ব। তাঁর সভায় যারই ডাক পড়তো, তিনিই তটস্থ থাকতেন অপমানিত হওয়ার ভয়ে। তাঁর পারিষদদের সবাই সিরাজের সামনে যেতেই ভয় পেতেন। কারণ, নবাবের স্বভাবই ছিলো সবাইকে অপমানিত-অপদস্থ করা।

সিরাজ উদ দৌলা তাঁর অন্যতম সেনাপতি মোহাব্বত জং-কে হরহামেশাই ঠাট্টা-মশকরা করতেন। তাঁকে নানা অপমানজনক নামে ডাকতেন। এমনকি জঘন্য ভাষায় বাপ-মা তুলেও গালাগাল করতেন। কিন্তু কেউই এসবের প্রতিবাদ করার সাহস পেতেন না।

আরেকজন ইতিহাসবিদ গোলাম হোসেন তাতাবারি লিখেন, সিরাজ উদ দৌলা’র কাছে সম্মানিত ব্যক্তি কিংবা ওনার দাসদাসীদের মাঝে কোনই তফাৎ ছিলো না। তিনি সবাইকেই গালমন্দ করতেন যখন-তখন। এসব কারণে অনেকেই তাঁকে ডাকতেন ফেরাউন নামে।

স্যার উইলিয়াম মেরেডিথ তাঁর এক লেখায় বলেন, সিরাজকে অনেকেই ভীষণ ধূর্ত এবং কপট বল্লেও আসলে এটা সিরাজের দোষ নয়। সিরাজ খুবই অল্প বয়েসে শাসনভার গ্রহণ করেন বলেই তাঁর মাঝে এক ধরনের ছেলামানুষী ছিলো।

দ্যা এনারকি নামের একটা বইয়ের লেখক ওয়িলিয়াম ডালর‍্যামপল লিখেন, ব্যবসায়ী এবং তাঁর পারিষদদের কাছে খুবই অজনপ্রিয় এবং অপছন্দের ব্যক্তি সিরাজ উদ দৌলা মারোয়ারী ব্যবসায়ীদের নিজের শত্রুতে পরিণত করেন। একারণেই জগত শেঠ ব্রিটিশ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীকে তখনকার আমলে চল্লিশ লাখ পাউন্ড বিনিয়োগ করে ওদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলানে। এর মাধ্যমে জগত শেঠ প্রিয়জন হয়ে ওঠেন অত্যন্ত লোভী লর্ড ক্লাইভের। অনেকেই জগত শেঠের এই ঋণ দেয়াকে প্রাসাদ ষড়যন্ত্র বলেই আখ্যা দেন।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের অনেক গবেষক বলছেন, সিরাজ উদ দৌলা ছিলেন একজন অযোগ্য সেনাপতি এবং শাসক। মির্জা মোহাম্মদ সিরাজ (নবাব সিরাজ উদ দৌলা’র আসল নাম) ছোটবেলা থেকেই ছিলেন প্রচণ্ড ডানপিটে আর নষ্ট স্বভাবের। নানা নবাব আলিবর্দি খানের অতি মমতার কারণেই সিরাজের এই স্বভাব ক্রমশ সীমা ছাড়িয়ে যেতে থাকে। অল্প বয়েস থেকেই সিরাজ মদ খেতেন এবং প্রায়ই মাতাল অবস্থায় তিনি আশেপাশের লোকজনের সাথে চরম খারাপ ব্যবহার করতেন।

সিরাজ উদ দৌলাকে কাশিমবাজার কারখানায় নিষিদ্ধ করা হয় একারণে যে তিনি সেখানে গিয়ে মাতাল অবস্থায় আসবাবপত্র ভাঙচুর করতেন, নারীদের সাথে বাজে আচরণ করতেন।

নবাব সিরাজ উদ দৌলা’র অসংখ্য স্ত্রী ও উপপত্নী ছিলেন। পাশাপাশি তাঁর দরবারে বিভিন্ন বয়েসী নারী আর নর্তকীর ভিড় লেগেই থাকতো বলেও অনেক গবেষক দাবী করেছেন।

# সালাহ উদ্দিন শোয়েব চৌধুরী

Please follow Blitz on Google News Channel

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here