সারাদেশে যখন হেফাজতে ইসলাম, আনসার আল ইসলামসহ জঙ্গী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলছে, তখন সারাদেশের কারাগারগুলোয় জামাতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), আনসার আল ইসলামসহ বিভিন্ন জঙ্গি গ্রুপ অন্যান্যবারের মতোই আগামীকাল ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এক্ষেত্রে জঙ্গীগ্রুপগুলোকে ঈদের জামাত আদায়ের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। আর এসব জামাতে ইমামতি করবে জঙ্গীরাই।
জানা গেছে, প্রতি বছরই জঙ্গীরা কারা প্রশাসনকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে সৌদি আরবের অনুসরণে একইদিনে ঈদ উদযাপন করে আসছে। ঈদের জামাত পরিচালনা করে জঙ্গিরাই। আর এসব জামাতের খুতবায় সরকার, প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্র এবং দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বক্তৃতা করে জঙ্গি ইমামরা। এরা বাংলাদেশে জিহাদের শুরুও ডাক দেয় ঈদের জামাত থেকেই। কারাগারগুলোর বাইরে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা থাকলেও কারাগারের ভেতরের এসব ভয়ংকর ঘটনা তাদের নজরে আসেনা। কারণ, কারাগারের ভেতরে ওদের প্রবেশের অনুমতি নেই।
আরো জানা গেছে, দেশের সব কারাগারেই ঈদে দুদিন জামাত হয়। আগেরদিন জঙ্গিদের জামাত আর পরের দিন দেশের অন্যসব এলাকার ঈদ জামাতের সাথে জামাত। ঈদের জামাতে কাশিমপুর-১ কারাগারে ইমামতি করেন জামাতে ইসলামীর যুদ্ধাপরাধী দেলোয়ার হোসেন সাঈদী। কাশিমপুর-২ ও হাই সিকিউরিটি কারাগারেও ইমামতি করেন জামাত নেতারা। আর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ঈদের জামাতে ইমামতি করতে বাইরে থেকে ইমাম আনা হয়। কিন্তু ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারেও জঙ্গীদের ঈদের জামাতে জঙ্গীরাই ইমামতি করে।
জামাই আদরে মামুনুল-রফিকুলরা
এরই মাঝে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক, রফিউল ইসলাম মাদানীসহ বেশ কিছু সংখ্যক হেফাজত নেতাকে। কারাগারে এদের রাখা হয়েছে আলাদা সেলে। কিন্তু সারাদিনই ওদের সেলে হেফাজত এবং জঙ্গী গ্রুপগুলোর সদস্যদের উপচে পড়া ভিড় লেগে থাকছে বলে কারা সুত্রে জানা গেছে। কারাগারে বসে মামুনুল, রফিকুলরা বসাথে কম্প্রমাইজ না করে সরকারের উপায় নেই।
আরো জানা গেছে, মামুনুল হক গং বলছেন ঈদের পর নাকি হেফাজতের ফাইনাল খেলা শুরু হবে। ওই খেলায় হেফাজতের পাশে থাকবে জামাতে ইসলামী, বিএনপি, হিজবুত তাহরিরসহ অন্যান্য জঙ্গী গ্রুপগুলো। রফিকুল ইসলাম মাদানী নাকি বলছেন, “ঈদের পর সারাদেশে বারুদের ধোঁয়া দেখা যাবে। সরকার পালানোর পথ পাবেনা”।
কারাগারে বসেই মামুনুল হক বাইরে চিঠি পাঠাচ্ছেন এবং মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করছেন। তিনি তার নিজের কিছু লোককে নির্দেশ দিয়েছেন তার এবং হেফাজতের বিরুদ্ধে যেসব সাংবাদিক কথা বলছেন – লেখালেখি করছেন, তাদের তালিকা তৈরী করে রাখতে। ঈদের পর এই হিটলিষ্ট বাস্তবায়নে হেফাজতে ইসলামকে সহযোগীতা করবে জঙ্গী গ্রুপগুলো।
থেমে নেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে সাইবার সন্ত্রাস
সরকারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইউটিউবের মাধ্যমে ব্যাপক সাইবার সন্ত্রাস চালাচ্ছে হেফাজতে ইসলামসহ জঙ্গী গ্রুপগুলোর হাজার-হাজার কর্মী। পাশাপাশি এসবে যোগ দিচ্ছেন কিছু সরকারী কর্মকর্তা। এসব বিষয়ে গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশের পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে এই সাইবার সন্ত্রাসের বিষয়গুলো জানানোর পরও কোনও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে।