লক ডাউন, দীর্ঘ মেয়াদী কোভিড সঙ্কট আট সবকিছু ছাড়িয়ে অনেকের জীবনেই অর্থনৈতিক টানাপড়েনের মাঝেই আরেকটা ঈদ। একমাসের সংযম সাধনার পর কাংখিত এই ঈদ গত বছর থেকেই ফ্যাঁকাসে হয়ে গেছে কোভিডের তাণ্ডবে। তারপরও মহান স্রষ্টার কাছে কৃতজ্ঞতা – আমরা বেঁচে আছি – সুস্থ আছি।
চলমান কোভিড সংকটে সবচেয়ে অসুবিধায় আছেন দিনমজুরেরা। কারণ, ওনাদের অনেকেরই কামাই-রোজগার অনেক কমে গেছে। এর উপর কোভিডের আতঙ্ক তো আছেই। এসব কারনেও কামাই রোজগারহীন মানুষর কাছে ঈদের চিরন্তন আবেদন ও জৌলুশ একেবারেই অনুপস্থিত।
গতবছর মার্চ মাসে শুরু হওয়া কোভিড পরিস্থিত মাঝে কয়েকমাস স্থিমিত থাকার পর আবার গত মাস তিনেক যাবত ভোগাচ্ছে আমাদেরকে সবাইকে। অনেকেই বলছেন, এই বিভীষিকার অবসান কবে হবে সেটা এখনই জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। কিন্তু আমি বলবো, কোনও বিপদই চিরস্থায়ী নয়। স্রষ্টার দয়ায় আমরা শিগগিরি এই কঠিন সময় থেকে পরিত্রান পাবো। তাছাড়া আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই কমে এসেছে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহনের ফলে। আরো কমতো যদি আমরা আরো বেশী সচেতন হতাম, সতর্ক থাকতাম। এক্ষেত্রে আমাদের উদাসীনতা সুবিদিত। আমরা স্বাস্থ্য বিধির ধার ধারতে একেবারেই রাজী নই। নিয়ম-কানুন আমাদের কাছে শৃঙ্খলের মতো।
যাই হউক প্রকৃতির নিয়মেই সবকিছু চলছে।দিনের পর রাত আসছে।রাতের পরে দিন। আমরা আমাদের জীবনধারা বলতে গেলে স্বাভাবিক নিয়মেই চলছে।
সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রাণপণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে একদম শুরু থেকেই। গতবছরও সরকার করোনা পরিস্থিতির কারনে ভোগান্তিতে পড়া বিপুল সংখ্যক মানুষকে প্রণোদনা দিয়েছে। নানাভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এবারও ঈদকে সামনে রেখে গতবারের তালিকা ধরে বিপুল সংখ্যক মানুষকে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে মাথা পিছু আড়াই হাজার টাকা করে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এর ফলে প্রান্তিক জনগন সাময়িকভাবে হলেও উপকৃত হচ্ছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু স্বাভাবিক জীবন ছন্দ ফিরে না আসা পর্যন্ত মানুষ স্বস্তি পাচ্ছে না এটাও ঠিক। ফলে জীবনের সব চাহিদা স্বাভাবিকভাবে মেটাতে পারছে না মানুষ। ঈদ উদযাপনও এর বাইরে নয়।
সবশেষে সবাইকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা। সবাই সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন।