সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম ইস্যুকে সরকারের বিরুদ্ধে এক মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের অপউদ্দেশ্যে উঠেপড়ে লেগেছে একটি চক্র। ঢাকার কাওরান বাজারে দুটো পত্রিকার অফিস আছে। এগুলোর মালিক দেশের বড় এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ওই পত্রিকাগুলোর একটার বিরুদ্ধে নানা কথাই শোনা যায়। এমনকি এটির সম্পাদক নিজেও স্বীকার করেছেন এক-এগারো পরবর্তী সময়ে তাঁর পত্রিকায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কাল্পনিক কাহিনী ছাপা হয় বিশেষ উদ্দেশ্যে। একারণে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে দুঃখজনক কারাবরণও করতে হয়েছে। শোনা যায় ওই পত্রিকার সম্পাদক নাকি বিতর্কিত ব্যক্তি ও অর্ধেক নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের সাথে মিলে দেশের বড় দুই দলের দুই নেত্রীকে মাইনাস করে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার খায়েশে মত্ত ছিলেন। মহান স্রষ্টার অসীম দয়ায় ওই ষড়যন্ত্রকারীদের কুমতলব সফল হয়নি। এরপর ওই পত্রিকার সম্পাদক আর অর্ধ নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে ষড়যন্ত্রের পাশাপাশি গত ১২ বছরে অনেক কিছু শোনা গেছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এযাবৎ পর্যন্ত কোনও সাংবাদিক হয়রানী কিংবা গ্রেফতারের ঘটনায় অভিনয় শিল্পী, কন্ঠশিল্পী থেকে শুরু করে বিনোদন জগতের সদস্যদের বিবৃতি দেয়ার কথা শুনিনি। কিন্তু এবার প্রথম আলো’র সাংবাদিকের পক্ষে ওনারা যেনো রীতিমত যুদ্ধ ঘোষণা করলেন। কারণ টা কি? প্রথম আলো বা ডেইলী ষ্টার বড় পত্রিকা জানি। কিন্তু বিনোদন জগতের সদস্যদের এই আকস্মিক তৎপরতার পেছনের ঘটনা হয়তো আমরা অনেকেই জানতে পারবো না।
ডেইলি ষ্টার ১৮ই মে সংখ্যার প্রথম পাতায় রোজিনা ইসলাম-এর পক্ষে একাধিক রিপোর্ট এবং সম্পাদকীয় মন্তব্য প্রকাশ করে। ভীষণ ভালো কথা। কিন্তু একই দিন ওদের ১২ নম্বর পৃষ্ঠায় ঢাউশ একটা বিজ্ঞাপন প্রকাশেও সামান্যতম সংকোচ ছিলোনা ওই কাগজের। বিজ্ঞাপনটা রোজিনা ইসলামকে নিয়েই। সরকারী বিবৃতি। এই বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে ডেইলি ষ্টার আবারও প্রমাণ করে দিলো, ওদের কাছে নীতি বলতে শুধুই টাকা। ওরা রোজিনা ইসলাম কেনো কোনও সাংবাদিকেরই পক্ষে নয়। ওরা গনতন্ত্রের পক্ষেও নয়। ওদের একমাত্র কাজ হলো ধান্দাবাজী।
সাংবাদিকতা আর সংবাদপত্র এখন কর্পোরেট প্রভুদের শর্তহীন ক্রীতদাসে পরিণত হয়ে গেছে। আমরা সাংবাদিকরা নিজেদের সম্মান-মর্যাদা ক্রমাগত হারিয়ে ফেলছি। আমাদের এখন ইচ্ছেমত ব্যবহার করছে কর্পোরেট প্রভুরা। একারণেই আজ আর সাংবাদিকতার স্বাধীনতা বলতে কিছু অবশিষ্ট আছে বলে মনে হয়না।
# জালাল উদ্দিন লষ্কর