‘বাঙ্গালীর মনের খোরাক’ শ্লোগান নিয়ে বাংলা চলচ্চিত্র এবং নাটকের দুটো আলাদা ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্ম ‘ত্রিশূল’ চলতি বছর ডিসেম্বর থেকে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। আপাতত বাংলাদেশে নির্মিত চলচ্চিত্র ও নাটক এই প্ল্যাটফর্ম গুলোয় থাকলেও পরবর্তীতে ভারতের পশ্চিম বঙ্গে নির্মিত সিনেমা ও নাটকও সংযোজিত হবে বলে প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে। চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে ‘ত্রিশূল’ অফিসের সাজসজ্জার কাজ শুরুর পাশাপাশি অক্টোবরের শেষ প্রান্ত থেকেই প্ল্যাটফর্ম গুলোর জন্যে বাংলা চলচ্চিত্র, নাটক এবং টেলিছবি নেয়া শুরু হবে।
ত্রিশূল এর সাথে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার সর্তে বলেন, এরই মাঝে ইউটিউব চ্যানেলগুলো নাটকের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পাশাপাশি ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোরও জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ হলো, বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান ভারতে দেখা যায়না। দ্বিতীয়ত মানুষের ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়াও এখন অনেকের পক্ষেই নির্দিষ্ট একটা সময়ে কোনও নাটক বা সিনেমা দেখা সম্ভব হচ্ছে না। এরফলে বাংলা নাটকের দর্শকরা ক্রমশ ইউটিউব চ্যানেল এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্ম গুলোর দিকেই ঝুঁকছেন। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ১-২ বছরে টেলিভিশন চ্যানেলের অন্তত ৭৫ ভাগ দর্শক ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্মে মাইগ্রেট করবেন।
তিনি বলেন, পশ্চিম বঙ্গেই প্রায় ৯ কোটি বাঙ্গালী। পাশাপাশি সারা বিশ্বজুড়ে বাঙ্গালীর সংখ্যাটাও বিশাল। আমরা লক্ষ্য করছি এরই মাঝে ভারতীয় ‘হইচই’ ‘জি৫’ সহ বেশকিছূ ওটিটি প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশে নির্মিত নাটক প্রচারিত হচ্ছে। ক’দিন আগেই নেটফ্লিক্সে মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘ডুব’ সিনেমাটি প্রদর্শিত হলো। ভারতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোয় বাংলাদেশে নির্মিত নাটক প্রচারের পরিমান বাড়ছে ক্রমশ। এর কারণ হলো, পশ্চিম বঙ্গের বাঙ্গালীদের কাছে বাংলাদেশে নির্মিত নাটকের চাহিদা সেখানকার স্থানীয় নির্মাতাদের নাটকের চাইতে অনেক বেশী। ওখানকার দর্শকরা মনে করেন, বাংলাদেশে নির্মিত নাটকের গল্প শক্তিশালী এবং এখানকার অভিনয় শিল্পীদের অভিনয়টাও অনেক এগিয়ে।
‘ত্রিশূল’ কর্মকর্তাকে যখন বলা হয় সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশে নির্মিত সিংহভাগ নাটকের গল্প লিখছেন পশ্চিমবঙ্গ কিংবা ভারতের নাট্যকাররা। এদের মাঝে উল্লেখযোগ্য মুনতাহা বৃত্তা নামের এক লেখক। বাংলাদেশী নাটকারদের গল্প যদি ভালোই হবে তাহলে এখানকার নির্মাতারা ভারত থেকে কেনো গল্প লিখিয়ে আনছেন, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বাংলাদেশী লেখক এবং নাটকারদের গল্পের মান অনেক ভালো। কিন্তু এখানে বড় সমস্যা হচ্ছে, ভারতের লেখক এবং নাট্যকাররা অনেক কম পারিশ্রমিকে গল্প লিখে দিচ্ছেন, চিত্রনাট্য করে দিচ্ছেন। এর ফলে নাটকের বাজেটে চাপ পড়ছে না। এখানকার নাট্যকারদের বেশীরভাগই ওনাদের পারিশ্রমিকের অংকটা ক্রমশ বাড়িয়ে ফেলায় নির্মাতাদের বাধ্য হয়েই ভারত থেকে গল্প আনতে হচ্ছে।